Hilarious Jokes: Tipu’s Festival of Laughter in Kochuripara

কচুরীপাড়ায় টিপুর হাসির উৎসব

Hilarious Jokes


ধাপ ১: টিপু মিয়ার বুদ্ধির কাণ্ড

দিনাজপুরের কচুরীপাড়া গ্রাম এমনিতেই শান্ত-সুবিধে জায়গা, কিন্তু সেখানে বাস করে এক অদ্ভুত মানুষ—টিপু মিয়া। তার অদ্ভুত বুদ্ধি আর হাস্যকর আচরণ গ্রামটাকে প্রায়শই ছোটখাট নাট্যমঞ্চে পরিণত করে। টিপু ছিল দারুণ আত্মবিশ্বাসী, কিন্তু ভীষণ ভুলোমন। একদিন বিকেলে সে হাট থেকে ফিরেই গলায় সুর তুলে ঘোষণা দিল, শুনুন শুনুন! আগামীকাল আমি এমন এক বুদ্ধির কাজ করব যে, পুরো কচুরীপাড়া ইতিহাসে থাকবে!

তার কথা শুনে মুহূর্তের মধ্যে চারপাশে কৌতূহলের ঝড় উঠল। ধান কাটতে কাটতে জালাল কাকা মাথা তুলে বললেন, হা হা, টিপু, আগেরবারও তো বলেছিলি তোর বুদ্ধি দেখাবি, শেষে কী করলি? বাজার থেকে হাঁস কিনতে গিয়ে মুরগির বাচ্চা কিনে আনলি! আশপাশের লোকেরা হেসে উঠল। হাসনা আপা কলসি নামিয়ে হেসে বললেন, গত মাসেও তো বুদ্ধি দেখাতে গিয়ে নিজের লুঙ্গি হারিয়ে এলি!

কিন্তু টিপু কোনো হাসি-ঠাট্টাকে পাত্তা দিল না। সে গম্ভীর মুখে বলল, তোমরা হাসো, কিন্তু কাল তোমরা হাঁ হয়ে যাবে। আমি কলসে বৃষ্টি ধরে রাখব, আর খুঁটি দিয়ে বাতাস আটকাব। তখন দেখবে আমার বুদ্ধি!

রাতভর টিপু তার উঠোনে প্রস্তুতি নিল। সে পুরনো বাঁশ কেটে ছোট খুঁটি বানাল, একটা মাটির কলস ধুয়ে চকচকে করল, আর গামছা শুকিয়ে রাখল। সে বারবার নিজের মনে বলল, গ্রামের লোকেরা হাসুক, কালকে আমার নাম হবে মহাবুদ্ধিমান টিপু।

সকালে গ্রামের বাচ্চারা খবর পেয়ে দৌড়ে এলো। জালাল কাকা, হাসনা আপা আর অন্যরা কাজ ফেলে তার উঠোনে জড়ো হল। টিপু কলস উঠোনে রাখল, খুঁটি গেঁথে দিল, এবং নাটকীয় ভঙ্গিতে বলল, আজ তোমরা কচুরীপাড়ার ইতিহাস দেখতে যাচ্ছো!

পাশের বাড়ির শেফালি খালা হাসতে হাসতে বললেন, টিপু, আকাশ একেবারে নীল, মেঘের চিহ্ন নেই। তুই কি সত্যিই বৃষ্টি ধরবি? টিপু বুক ফুলিয়ে বলল, ওটাই তো আসল বুদ্ধি! রোদ্দুরেও কেমন করে বৃষ্টি ধরা যায়—দেখিয়ে দেব!

লোকেরা কৌতূহলী দৃষ্টি বিনিময় করল। শিশুরা খিলখিলিয়ে হাসতে লাগল। টিপুর চোখে এক অদ্ভুত দৃঢ়তা—যেন সে সত্যিই প্রকৃতির নিয়ম বদলে ফেলতে পারবে। গ্রামের নিস্তব্ধ দুপুর যেন হঠাৎই প্রত্যাশার হাসির ঝিলিক পেল।

ধাপ ২: কলসে বৃষ্টি ধরার মহাযজ্ঞ

বিকেলবেলা হঠাৎ কালো মেঘ জমতে শুরু করল। গ্রামের সবাই চমকে উঠল। ছাতা খুঁজতে ব্যস্ত, আর টিপু ছুটে গেল তার কলসের কাছে। সে কলসটা আকাশের দিকে উঁচু করে ধরে বলল, দেখো, আমি বৃষ্টি ধরে রাখব! প্রথম কয়েক ফোঁটা পড়তেই সে আনন্দে নাচতে লাগল।

কিন্তু বাস্তবতা একটু অন্যরকম ছিল। কলসের অর্ধেক জল বাইরে ছিটকে পড়ল, আর বাকি ভরে গেছে। টিপু গম্ভীর মুখে বলল, এটাই প্রমাণ—আমি বৃষ্টি ধরতে পারি! হঠাৎ কলস ভারী হয়ে পিছলে গেল, আর সে মাটিতে পড়ে কলসের জল নিজের মাথায় ঢেলে দিল। গ্রামের ছোট্ট শিশুরা পিছে পিছে দৌড়ে চিৎকার করতে লাগল। জালাল কাকা থামতে পারল না, হা হা! টিপু, মনে হচ্ছে বৃষ্টি না, তুই নিজেই জল হয়ে গেলি! টিপু হেসে বলল, ভুল বোঝো না! এটা আমার পরিকল্পিত কৌশল। বৃষ্টির জলও যদি নিজের সঙ্গে খেলতে না চায়, তাহলে কীভাবে শেখাবে?

এরপর সে খুঁটির দিকে গেল। খুঁটিতে গামছা বেঁধে জোরে জোরে বলল, বাতাস, থামো! থামো! বাতাস তো বাঁচল না। খুঁটি নড়তে নড়তে পড়ে গেল। গামছাটা উড়ে গিয়ে পাশের গরুর পিঠে পড়ল। গরু চমকে উঠে দৌড় দিল, তার পিছু নিল শিশুরা আর তাদের পিছু নিল টিপু—পুরো দৃশ্য যেন গ্রামে একটা বড় সার্কাসের মতো।

হাসনা আপা হেসে বললেন, টিপু ভাই, বাতাস আটকাতে গিয়ে পুরো গ্রামকে সার্কাস বানিয়ে দিলি। টিপু গম্ভীর মুখে বলল, দেখছো! আমার কৌশল সফল। যারা ভয় পায়, তাদের পালানোই বুদ্ধি।

গ্রামের মানুষ আর শিশুরা পেট ধরে হেসে উঠল। এমন বোকামি আর হাস্যকর দৃশ্য গ্রামের আকাশে খুশির ঢেউ তুলল। রাত পর্যন্ত সবাই টিপুর মহাযজ্ঞের কথা নিয়ে হাসতে লাগল। ছোটরা আবার বলল, কালও এমন কিছু করবি? টিপু মুখ গম্ভীর করে বলল, অবশ্যই, আরো বড় বুদ্ধি আছে।

ধাপ ৩: ভুল বোঝাবুঝির মেলা

পরের দিন পাশের গ্রাম থেকেও লোকজন টিপুর বুদ্ধি দেখতে এল। টিপু ঘোষণা দিল, আজ আমি আকাশের তারা নামিয়ে আনব। রাত হলে গ্রামে জমায়েত শুরু হল। টিপু বড় মাটির হাঁড়ি নিয়ে দাঁড়াল। হঠাৎ হাঁড়ি উঁচু করে বলল, যদি তারাও কাছে আসে, সঙ্গে সঙ্গে ধরব!

হাঁড়ি হাত থেকে ছুটে পাশের কাদার গর্তে পড়ল। টিপু ভেবেছে এটা তার প্রমাণ। হাঁড়ি তুলে সে ঘোষণা দিল, দেখো, আমি তারা ধরেছি, শুধু একটু ময়লা হয়েছে। গ্রামবাসী হেসে হেসে লুটোপুটি খেতে লাগল। হাশেম বলল, টিপু ভাই, ওটা তারার মতো কিছু না, কাদা!

টিপু জোরে বলল, তুমি কিছু বুঝতে পারছ না, তারারা মাটিতে নেমে এভাবেই ঝিকিমিকি করে।
তারপর সে হাঁড়ি মাথায় চাপিয়ে নাচতে শুরু করল। হাঁড়ির ভেতর তার কণ্ঠস্বর অদ্ভুতভাবে প্রতিধ্বনিত হলো। সে মনে করল আকাশের দেবতারা তার সাথে কথা বলছে। বাচ্চারা পিছে পিছে নাচল, বড়রা হাসতে হাসতে কেঁদে ফেলল।

হাসনা আপা বললেন, টিপু ভাই, যদি হাসি বিক্রি করত, ক্রেতা হাহাকার করত!
টিপু গম্ভীরভাবে বলল, আবারও প্রমাণ, হাসিই বড় বুদ্ধি।  গ্রামে রাত পর্যন্ত হাসির ঢেউ চলল।

ধাপ ৪: বুদ্ধির চূড়ান্ত পরীক্ষা 

পরের সকাল। টিপু বলল, আজ শেষ পরীক্ষা। চোখ বেঁধে বস্তু চিনব। গ্রামবাসী মাঠে জমায়েত। টিপু হাঁড়ি, কলস, গামছা নিয়ে প্রস্তুত। জালাল কাকা চোখ বেঁধে দিল।

প্রথমে টমেটো ধরাল। সে বলল, পাহাড়ের পাথর! সবাই হেসে উঠল। পরে কলস ধরানো হলে বলল, এ তো চাঁদ! হাশেম চিৎকার করল, ওহ, টিপু ভাই, এটা তো কলস!

শেষে গরুর লেজ ধরিয়ে দিল। টিপু বলল, এটি গ্রামের পতাকা।
সবাই হেসে হেসে কেঁদে ফেলল। টিপু গম্ভীরভাবে বলল, দেখো, আমি ইচ্ছাকৃত ভুল বলেছি, হাসি ছাড়া জীবনের কোনও কাজ অসম্পূর্ণ।

গ্রামে বুঝল, টিপুর বুদ্ধি হয়তো কাজে লাগে না, কিন্তু আনন্দ, মিলন আর হাসি ছড়ায়। বাচ্চারা ঘিরে ধরল, টিপু হেসে বলল, আমার কাজ শেষ। এখন তোমরা হাসির রাজা হব।

গ্রামের আকাশে হালকা মেঘ ভেসে যায়, বাতাস বইছে—টিপুর কাণ্ড ছড়িয়ে দিচ্ছে হাসি।

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
id="i-whatsapp" viewbox="0 0 512 512" stroke="none" fill="currentColor">